Header Ads

Header ADS

খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি ? খতিয়ান নম্বর কি? খতিয়ান কাকে বলে?

খতিয়ান নম্বর কি?

আশা করি , আপনি ভালো আছেন?এখন আমরা জানবো ভূমি জরিপের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় খতিয়ান এর বিস্তারিত । যখন আমরা জমি  ক্রয়- বিক্রয় করি , তখন খতিয়ান নিয়ে আমাদের অনেক সমস্যার সম্মুক্ষিন হতে হয়। তখন আমাদের সামনে চলে আসে খতিয়ান কি?, খতিয়ান নম্বর কি? , খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি?, সিএস খতিয়ান, এস এ খতিয়ান, আর এস খতিয়ান, সিটি জরিপ, বিএস খতিয়ান ইত্যাদি বিষয়। এই বিষয়গুলো না জানার কারনে আমাদের প্রচুর সমস্যায় পড়তে হয় ।এই টপিক পড়লেই আপনি এসব সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। 

আমাদের দেশে জায়গা- জমিন নিয়ে অনেকগুলো জরিপ সংঘঠিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত যতগুলো জরিপ  করা হয়েছে সেগুলো হলো -

১. সিএ জরিপ

২. এস এ জরিপ

৩. আর এস জরিপ

৪. বিএস জরিপ

৫. সিটি জরিপ ইত্যাদি 

এই বিষয়গুলো জমির মালিকানার জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন। এই বিষয়ে জানা না থাকলে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এই খতিয়ান গুলো দেখতে অনেকটা একই রকম। যার ফলে আমাদের চিনতে অসুবিধা হয় যে , কোনটা কি খতিয়ান? আমাদের সাথে থাকার চেষ্টা করুন , তাহলে আপনি কিছু জানতে পারবেন । 

খতিয়ান কি 

ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের কাছে খতিয়ান মানে জাবেদা থেকে হিসাব সমূহকে শ্রেণী বিন্যাস করণ  । কিন্তু জমি - জমার হিসাবের ক্ষেত্রে আলাদা বিষয়। 

এখন আমরা জানবো খতিয়ান সম্পের্কে। জরিপ বিভাগ কর্তৃক সরেজমিনে গিয়ে জমির মালিকানা বিবরন ও নকশা তৈরি করে জমির যে রেকর্ড প্রকাশ করা হয় , তাকে সাধারণত খতিয়ান বলে । 

খতিয়ান নম্বর: 

পদুয়া গ্রামের সবগুলো জমিকে অনেক খণ্ডে ভাগাভাগি করা হলো। প্রতিটি দাগের একজন মালিক আছে।কোন ব্যক্তি একটি জমির  থাকতে পারে বা অনেকগুলো জমির মালিক থাকতে পারে।জমির সঠিক হিসাব এর জন্য একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দরকার হয় ।আমরা প্রাত্যহিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের একাউন্ট বা ঠিকানা খুলে থাকি। এগুলো খুলতে কিছু তথ্যের প্রয়োজন হয়। তথ্যগুলো আমাদের অ্যাকাউন্টে সত্যায়িত করে।



ঠিক তেমনি জমির হিসাব এর জন্য যে অ্যাকাউন্ট নম্বর দেয়া হয় তাকে খতিয়ান নম্বর বলা হয়।যে অ্যাকাউন্ট নম্বর হতে জমির মালিক, জমির দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, জমির শ্রেণী ,জমির মালিকের কতটুকু জমি আছে ইত্যাদি জানা যায় তাকে খতিয়ান নম্বর /খতিয়ান বলে।


একটি খতিয়ান নম্বর এর মালিকের একটি জমি থাকতে পারে বা আবার একাধিক জমি থাকতে পারে। ঠিক তেমনি তার একটি মৌজাতে তার অনেকগুলো খতিয়ান থাকতে পারে। সাধারণ ভাষায় খতিয়ানকে রেকর্ড অফ রাইটস বা খতিয়ান সত্তলিপি বলা হয়।

সহজ ভাষায়,সত্ত সংরক্ষণ ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে সার্ভে কেন্দ্র কর্তিক প্রত্যেক মৌজা, ভূমির মালিক বা মালিকগণের নাম, পিতা অথবা স্বামীর নাম ঠিকানা, জমির হিস্যা এবং শর্তাদি নম্বরসহ ভূমির পরিমাণ ইত্যাদি যেসব তালিকা প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলা হয়। মালিকানার জন্য খতিয়ান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।


খতিয়ান এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা:


 খতিয়ান  একটি ফার্সি শব্দ৷ । জমি চিহ্নিত করার জন্য নথি৷ ।দখল, মালিকানা নির্ধারণ এবং ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণের উদ্দেশ্যে জরিপের মাধ্যমে প্রস্তুত করা নথি খতিয়ান নামে পরিচিত৷ এটি অধিকার রেকর্ড, সোটোলিপি বা বারান্দা নামেও পরিচিত৷ । এটি শুধুমাত্র অধিকারের রেকর্ড কিন্তু এটি মালিকানার দলিল নয়। প্রতিটি উপজেলা ছোট ছোট প্লটে বিভক্ত। এই প্লটগুলো মৌজা নামে পরিচিত।

<<< মৌজা বলতে কি বোঝায়? >>>

 মৌজাকে একটি নম্বর দেওয়া হয়। সংখ্যাটি মৌজা নম্বর নামে পরিচিত। এটি জুরিসডিকশন লিস্ট নম্বর নামেও পরিচিত। মৌজা আবার প্লটে বিভক্ত। এই সংখ্যাটি সাধারণত উত্তর-পশ্চিম বিন্দু থেকে শুরু হয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব বিন্দু পর্যন্ত শেষ হয়। একটি নির্দিষ্ট মালিক বা একাধিক মালিকের একাধিক প্লট থাকতে পারে। একটি খতিয়ান একটি/আরো সম্পূর্ণ প্লট বা একটি প্লটের অংশের জন্য খোলা হয়৷। মৌজা অনুসারে শতাধিক খতিয়ান একত্রে আবদ্ধ হয়৷ তাই খতিয়ানদের উপর নির্ভর করে এটি সংখ্যায় বাড়তে পারে। বিধি, প্রজাস্বত্ব বিধি,- প্লট নং --- আংশিক বা সম্পূর্ণ। নাম, পিতার নাম, মালিক বা মালিকদের ঠিকানা, মালিকের অংশ, মোট জমির পরিমাণ, শ্রেণী এবং জমির প্রকৃতি, অবস্থান, স্বাচ্ছন্দ্যের অধিকার, প্রদেয় ভূমি উন্নয়ন করের পরিমাণ, কর দেওয়ার পদ্ধতি, ভাড়াটেদের অধিকার ও বাধ্যবাধকতা, ভাড়া মুক্ত অবস্থা ইত্যাদি। শ্রেণীবিভাগ-

১. এসএ খতিয়ান

২.আরএস খতিয়ান

৩.বিএস খতিয়ান

৪.সিটি খতিয়ান

৫.সিএস খতিয়ান

৬.দিয়ারা খতিয়ান

সাধারণত জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান তৈরি করা হয়। কিন্তু জরীপ সব সময় হয় না। সম্পত্তি দুটি জরিপের মধ্যে হস্তান্তর করা যেতে পারে। তাহলে খতিয়ানে মালিকানা পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। মিউটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা এই ধরনের খতিয়ান মিউটেশন খতিয়ান নামে পরিচিত। এসি ল্যান্ড অফিস এটি করে।


জরিপ/জরীপ খতিয়ান: 


ভূমি জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগ এই জরিপ পরিচালনা করে। খতিয়ান ছাপার জন্য এর নিজস্ব প্রেস আছে। জরিপের নাম অনুসারে খতিয়ানের নামকরণ করা হয় যেমন সিএস খতিয়ান, আরএস খতিয়ান এসএ খতিয়ান ইত্যাদি।  সাধারণত জমির খতিয়ান দুই ভাগে ‍ বিভক্ত।

১. রেকর্ডীয় খতিয়ান

২. খারিজ খতিয়ান 

১. রেকর্ডীয় খতিয়ান : 

রেকর্ডীয় খতিয়ান তৈরি হয় যখন জমিটি কেউ ক্রয় করেননি এরকম জমির যে খতিয়ান তৈরি হয়  সে খতিয়ানকে রেকর্ডীয় খতিয়ান বলে । 

২. খারিজ খতিয়ান : 

সাধারণত খারিজ খতিয়ানর তৈরি হয় রের্কডীয় খতিয়ান থেকে ।অর্থাৎ রের্কডীয় খতিয়ান সম্পন্ন যে জমি ‍ৃ অন্য ব্যাক্তি ক্রয় করে তখন যে খতিয়ান তৈরি হয় , তাকে খারিজ খতিয়ান বলে। খারিজ খতিয়ান চেনার উপায় হলো - সাধারণত খতিয়ানের নিচের অংশে মন্তব্য বলে  একটি অংশ থাকে । মন্তব্য স্থানে লেখা থাকবে আগত খতিয়ান  এবং থতিয়ান নম্বর লিখা থাকবে । খারিজ খতিয়ানকে সাধারণত নামজারি খতিয়ানও বলা হয় । 

খতিয়ানের শ্রেণীবিভাগ: 

সিএস

এই খতিয়ানটি বেঙ্গল টেন্যান্সি অ্যাক্ট 1885 এর অধীনে প্রস্তুত করা হয়েছিল। এটি ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে নামে পরিচিত। এই জরিপটি 1888 সালে কক্সবাজার উপজেলার রামু থেকে শুরু হয় এবং 1940 সালে শেষ হয়।  এটি  ব্রিটিশ সরকারের আমলে প্রস্তুত করা হয় । এটি বাংলার প্রথম জরিপ। 

এসএ খতিয়ান বা পিএস খতিয়ান 

এই খতিয়ানটি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন 1950-এর অধীনে প্রস্তুত করা হয়েছিল। আসলে এটি একটি ব্যবহারিক জরিপ নয় বা এটি মাঠ জরিপের উপর ভিত্তি করে নয়। জমিদার বা জমিদারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই খতিয়ান করা হতো। এসএ খতিয়ান মানে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ খতিয়ান বা সেটেলমেন্ট অ্যাটেস্টেশন। এটি পিএস খতিয়ান বা পাকিস্তান সার্ভে খতিয়ান নামেও পরিচিত। এটি কোনো প্রামাণিক খতিয়ান নয়। 

আরএস খতিয়ান:

 সিএস জরিপের 50 বছর পর আরেকটি জরিপ অনুষ্ঠিত হয়। এই জরিপটি রিভিশনাল সার্ভে নামে পরিচিত এবং এই জরিপ থেকে তৈরি খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। এই জরিপের উদ্দেশ্য হল জমির পরিমাণ, মালিকের নাম এবং মালিকের নাম আপডেট করা। এটি সিএস খতিয়ানের চেয়ে বেশি প্রামাণিক। ১৪৪ দ্বারা অনুযায়ী যে খতিয়ান তৈরি করা হয় , তাকে আর  এস খতিয়ান বলে । 

বিএস খতিয়ান: 

এটি অন্য সব খতিয়ানের চেয়ে বেশি খাঁটি খতিয়ান। 1970 সালে একটি জরিপ শুরু হয়েছিল যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এই জরিপটি বাংলাদেশ জরিপ নামে পরিচিত এবং বিএস জরিপ থেকে তৈরি খতিয়ানটি বিএস খতিয়ান বা বাংলাদেশ জরিপ খতিয়ান নামে পরিচিত।

আশা করি , সকলে খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য ।
আপনি যদি খতিয়ান বিষয়ে আরো ধারনা নিতে চান , তাহলে নিচের টপিক আপনার কাজে  লাগবে। 
চট করে দেখে আসতে পারেন। 

<<<খতিয়ানে কী কী থাকে?>>>

আরো কিছু জানতে চাইলে সাথে থাকুন:

১.মৌজা বলতে কি বোঝায়?

২.মৌজা ম্যাপ বলতে কি বুঝায়? মৌজা ম্যাপ কি?

৩.খতিয়ান নম্বর কি?What is the Ledger number?

৪.খতিয়ান এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা।

৫.জরিপ (survey)। সিএস জরিপ। আর এস জরিপ। এস এ জরিপ।

৬.পর্চা। পর্চা বলতে কী বোঝায়?

৭.সম্পত্তির প্রকারভেদ। সম্পত্তির ধরন। বিভিন্ন প্রকার সম্পত্তি।

৮.জরিপ। জরিপ কি? জরিপ বলতে কি বুঝায়? জরিপের সাধারণ জ্ঞান।

৯.দাগ বলতে কি বোঝায়?দাগ কি?ভূমি জরিপে দাগ বলতে কি বোঝায়?

See the more topic:

1.কম্পিউটার কি?:https://nahidec50.blogspot.com/2022/10/what-is-computerwhat-does-computer-mean.html

2.The history of computer.কম্পিউটারের ইতিহাস বলতে কী বোঝায়? কম্পিউটারের সঠিক ইতিহাস ।:The history of computer.


Follow me:

1.Facebook:https://www.facebook.com/mdnahid456?_rdc=1&_rdr

2.Youtube:https://www.youtube.com/channel/UC87O_kSJomKCJtWnYAjFu9Q/featured


No comments

Theme images by Jason Morrow. Powered by Blogger.